ব্রাজিল
বর্তমান ফিফা র্যাংকিং: ২
বিশ্বকাপে উপস্থিতি : ২০১৮ সালে ২১তম বারের মত
বিশ্বকাপ ২০১৪: কোয়াটার ফাইনাল

ফুটবল বিশ্বকাপ আর ব্রাজিল এই শব্দ দুটিকে সমার্থক বললেও ভুল বলা হবে না। আসলে ফুটবল খেলাটাকে ব্রাজিল এমন এক শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, ব্রাজিল নামটা উচ্চারিত হলেই আপনার মনে সর্ব প্রথম ফুটবলের ছবিই ভেসে ওঠে। এমনটা হবেই বা না কেন?
এই দলটি এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপের সব কটি আসরেই উপস্থিত ছিল। এমনকি এর জন্য তাঁদেরকে কখনোই প্লেঅফ খেলারও প্রয়োজন পড়ে নি। আর ব্রাজিল দলের বিশ্বকাপ সাফল্য নিয়ে নতুন করে কিছুই বলার নেই।
৫ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন এই দলটি কনফেডারেশন কাপের সর্বোচ্চ ৪ বারের চ্যাম্পিয়ন। অনেক ফুটবল বিশেষজ্ঞ আর সাংবাদিকের মতে ১৯৭০ সালের ব্রাজিলই ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা দল হিসেবে বিবেচিত। যদিও অনেকে ১৯৮২ সালের ব্রাজিল দলকেও সেরা বলে থাকেন। তবে ৮২ সালের এই দলটি সবাইকে এক প্রকার অবাক করেই বিশ্বকাপে ব্যর্থ হয়।

সে যাই হোক, “খেলাটি আবিষ্কার করেছে ইংল্যান্ড, কিন্তু তা পরিপূর্ণ করেছে ব্রাজিল” সেলেসাওদের সম্পর্কে প্রচলিত এই প্রবাদই ফুটবলের ব্রাজিলকে বোঝানোর জন্যে যথেষ্ট।
এবারের রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের এক তৃতীয়াংশ হয়ে যাওয়ার পরে ল্যাটিন আমেরিকা অঞ্চলের পয়েন্ট তালিকের ৬ নাম্বারে নেমে গিয়েছিল সেলেসাও রা। এরপরে বহিষ্কৃত কোচ দুঙ্গার কাছ থেকে দলের দায়িত্ব বুঝে নিয়েই দৃশ্যপট সম্পূর্ণ বদলে ফেলেন বর্তমান কোচ তিতে। নতুন কোচের অধিনে ১০ জয় আর ২ ড্রতে ৪ রাউন্ড বাকি থাকতেই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে সেলেসাও রা।
নিজের ক্যারিয়ারের মোক্ষম সময়ে থাকা নেইমারই যে ব্রাজিলের নির্ভরতার সবচেয়ে বড় অংশ সেটা সর্বজন স্বীকৃতই। যদিও মাত্রই ভাঙা পায়ের ইঞ্জুরি থেকে সেরে দীর্ঘদিন পর মাঠে ফিরেছেন বিশ্বের সবচেয়ে দামি এই ফুটবলার। আর মাঠে ফিরে ফর্মটাও বেশ ধরে রেখেছেন। তবে একজনের উপরে ভর করে তো আর বিশ্বকাপ জেতা যায় না, তাই পুরো দলকেই বেশ ভালভাবেই সাজিয়ে তুলেছেন কোচ তিতে।

গ্যাব্রিয়েল জেসুস এর আর রবার্ত ফিরমিনো কে নিয়ে নেইমারের নেতৃত্বাধীন আক্রমণভাগটা বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরাই বলতে হবে। আর মাঝমাঠে নিজেদের দায়িত্বটা বেশ ভালভাবেই পালন করছেন কুতিনহো, ক্যাসেমিরো আর পোলিনহোরা।
তবে মার্সেলোর নেতৃত্বাধীন রক্ষনভাগে যে কিছুটা দুর্বলতা আছে তা সাম্প্রতিক সময়ে বেশি ভালই চোখে পড়েছে। তবে মনে হচ্ছে উইংয়ে দানি আলভেজের সার্ভিসটা কিছুটা হলেও মিস করবে ব্রাজিল দল। তবে দানিলো বা পেদ্রো দের দিয়ে সেটা পুষিয়ে নেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টাই করবে তাঁরা।

ব্রাজিল বিশ্বকাপ স্কোয়াড
কোচ: তিতে
গোলকিপার: অ্যালিসন (রোমা), এডারসন (ম্যানচেস্টার সিটি), ক্যাসিও (করিন্থিয়ানস)।
ডিফেন্ডার: দানিলো (ম্যানচেস্টার সিটি), ফাগনার (করিন্থিয়ান্স), মার্সেলো (রিয়াল মাদ্রিদ), ফিলিপে লুইস (এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ), থিয়াগো সিলভা, মারকুইহোস (প্যারিস সেন্ট জার্মেইন), মিরান্ডা (ইন্টার মিলান) পেড্রো জেরোমেল (গ্রিমিও)।
মিডফিল্ডার: ক্যাসেমিরো (রিয়াল মাদ্রিদ), ফার্নান্দোহো (ম্যানচেস্টার সিটি), পলিনহো (বার্সেলোনা), ফ্রেড (শখতার দোনেস্ক), রেনেটো অগাস্টো (বেইজিং গুওন), ফিলিপ কুতিনহো (বার্সেলোনা), উইলিয়ান (চেলসি), ডগলাস কোস্টা (জুভেন্টাস)।
ফরোয়ার্ড: নেইমার জুনিয়র (প্যারিস সেন্ট জার্মেই), টাইসন (শখতার দোনেস্ক), গ্যাব্রিয়েল জেসুস (ম্যানচেস্টার সিটি), রবার্তো ফিরমিনো (লিভারপুল)।
গেল বিশ্বকাপে নিজের ঘরের মাঠে ব্যর্থ সেলেসাওরা এবার বেশ সম্ভাবনা নিয়েই রাশিয়া যাচ্ছে। তবে হট ফেভারিটের তকমা নিয়ে এবার তাঁরা কতটুক সফল হতে পারে সেটাই এখন দেখার।
ব্রাজিল যে কতটা ফেভারিট তা তাঁদের বাজির দর থেকেই আন্দাজ করা যায়। আগামী ১৭ তারিখে সুইজারল্যান্ডের সাথে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু হচ্ছে সেলেসাওদের এবং এ সে ম্যাচে তাঁদের জয়ের জন্যে বাজির দর রয়েছে ১.৪০ আর সুইজারল্যান্ডের জয়ের দর ৮.৫০।