সুইজারল্যান্ড
বর্তমান ফিফা র্যাংকিং: ৮
বিশ্বকাপে উপস্থিতি: ২০১৮ সালে ১০ম বারের মত
২০১৪ বিশ্বকাপ : রাউন্ড অব ১৬

সুইজারল্যান্ড বললেই আমাদের চোখে বরফ আর পাহাড় ঘেরা অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্যই ভেসে ওঠে। কিন্তু সেই শুরুর সময় থেকেই যে ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এই অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশটির নিয়মিত উপস্থিতি রয়েছে তা আমাদের অনেকেরই অজানা। ১৯৩৪,৩৮ আর ৫৪ এর কোয়াটার ফাইনালিষ্ট এই দলটি ২০০৬ এর বিশ্বকাপে এক অনন্য রেকর্ড গড়ে। কোন গোল হজম না করেই তাঁরা রাউন্ড অব ১৬ থেকে ইউক্রেনের সাথে টাইব্রেকারে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়। পুরো বিশ্বকাপেই নির্ধারিত আর অতিরিক্ত সময়ে গোল হজম না করে বাদ পড়া একমাত্র দল তাঁরাই।
রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ইউরোপের বি গ্রুপ থাকা সুইচরা বাছাইপর্বের পুরো সময় জুড়েই অসাধারণ খেলে। তাঁদের গ্রুপের শীর্ষ বাছাই পর্তুগালের সমান সংখ্যক পয়েন্ট নিয়ে বাছাইপর্ব শেষ করে তাঁরা, তবে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় প্লেঅফ খেলতে হয় তাঁদের। নর্দান আয়ারল্যান্ডের সাথে প্লেঅফে এগ্রিগেটে ১-০ তে জিতে বিশ্বকাপ যাত্রা নিশ্চিত করে সুইসরা।

সুইচদের প্রধান হাতিয়ার জারদান সাকিরি আশানুরূপ ভাবে তাঁর ফুটবল ক্যারিয়ারকে সাজাতে না পারলেও সুইজারল্যান্ডের জার্সিতে তিনি বরাবরই অসাধারণ। এই বিশ্বকাপেও দল তাঁর কাছ থেকে বেশ ভাল কিছুই আশা করছে। আর অধিনায়ক স্টিফেন লিচস্টেইনারের মত উইংগার থাকায় দলের আক্রমনটাও বেশ শক্তিশালীই হয়েছে বলা চলে। আর বড় পরিসরের আয়োজনে আবারো নিজেকে প্রমানের সুযোগ পাচ্ছেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে মোক্ষম সময়ে থাকা গ্রায়েন্ট জাকা।
সুইজারল্যান্ড বিশ্বকাপ স্কোয়াড
কোচ: ভ্লাদিমির পেটকোভিচ
গোলরক্ষক: রোমান বুয়ের্কি (বরুসিয়া ডর্টমুন্ড), ইয়োভন এমভোগো (লিপজিগ), ইয়ান সোমার (বরুসিয়া মেনশেনগ্লাদবাখ)।
ডিফেন্ডার: ম্যানুয়েল একাঞ্জি (বরুসিয়া ডর্টমুন্ড), জোহান ডিজৌরু (আন্তালয়াস্পোর), নিকো এলভেদি (বরুসিয়া মেনশেনগ্লাদবাখ), মাইকেল ল্যাঙ (বাসেল), স্টিফেন লিচস্টেইনার (জুভেন্টাস), জ্যাক-ফ্রাঁসোয়া মোউবান্দজে (তুলৌস), রিকার্ডো রদ্রিগেজ (মিলান), ফ্যাবিয়ান স্কার (ডিপোর্টিভো লা করুনা)।
মিডফিল্ডার: ভ্যালোন বেহরামি (উদিনেস), ব্লেরিম জেমাইলি (বোলোগ্না) , গেলসন ফার্নান্ডেজ (এইন্ট্রাচট ফ্রাংকফুর্ট), রেমো ফ্রিউলার (আটলান্টা), জারদান সাকিরি (স্টোক সিটি), গ্রানিত জাকা (আর্সেনাল), স্টিভেন জুবের (১৮৯৯ হফেইনহেইম), ডেনিস জাকারিয়া ( বরুসিয়া মেনশেনগ্লাদবাখ)।
ফরোয়ার্ড: জসেফ দ্রমিচ (বরুসিয়া মেনশেনগ্লাদবাখ) ব্রেল এম্বোলো (শালকে), মারিও গাভার্নোভিচ গাভার্নোভিচ (ডায়নামো জাগরেব), হারিস সেফারোভিচ সেফারোভিচ (বেনফিকা)।
সার্বিয়া
বর্তমান ফিফা র্যাংকিং: ৩৪
বিশ্বকাপে উপস্থিতি : ২০১৮ সালে ১২ তম বারের মত ( সার্বিয়া নামে ২য়)
বিশ্বকাপ ২০১৪: কোয়ালিফাই করতে পারে নি

সাবেক যুগোস্লাভিয়া আর সার্বিয়া ও মন্টিনেগ্রো এই দুই দেশের অংশ হিসেবে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মোট ১০ টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে সার্বিয়া। ২০০৬ সালে মন্টিনেগ্রো থেকে আলাদা হয়ে ২০১০ বিশ্বকাপে স্বাধীন সার্বিয়া হিসেবে তাঁরা নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ খেলে। তবে ফিফা আর উয়েফা দুটি সংস্থাই সার্বিয়াকে যুগোস্লাভিয়া আর সার্বিয়া ও মন্টিনেগ্রো এই দুই দেশের উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করায় এটি তাঁদের ১২ তম বিশ্বকাপ, নচেৎ এটি হত তাঁদের ২য় বিশ্বকাপ উপস্থিতি।
সার্বিয়া ইউরোপীয় অঞ্চলের বাছাইপর্বে ডি গ্রুপের শীর্ষ বাছাই হিসেবে এবারের রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকেট পেয়েছে। যদিও তাঁদের গ্রুপটি তুলনামূলক ভাবে সহজই ছিল, তবে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করতে তাঁদের শেষ রাউন্ডে আয়ারল্যান্ডকে হারানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।
বাছাইপর্বে দৃষ্টি আকর্ষণ করা সাউদাম্পটন মিডফিল্ডার দুসান তাদিচ আর নিউক্যাসলের রিসার্ভ বেঞ্চেই বেশিরভাগ সময় কাটনানো আলেকজান্ডার মিত্রভিচকেই সার্বিয়ার বড় শক্তি বলে মনে হচ্ছে। সেই সাথে দলে আরো আছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নিমানজা ম্যাটিচ আর মিলানের মিলানকোভিচ-সেভিচের মত তারকারা। তবে দলের নেতৃত্বে থাকা অধিনায়ক ব্রানিস্লাভ ইভানকোভিচও দলকে বেশ ভাল ভাবেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সার্বিয়া বিশ্বকাপ স্কোয়াড
কোচ: ম্লাদেন ক্রস্তাজিচ
প্রাথমিক বিশ্বকাপ স্কোয়াড – চূড়ান্ত ২3 জন খেলোয়াড়ের স্কোয়াড এখনো নাম করা হয়নি
গোলকিপার: ভ্লাদিমির স্তোজকোভিচ (পার্টিজান বেলগ্রেড), প্রিড্রাগ রাজকোভিচ (ম্যাককেবি তেল আভিভ), মার্কো দমিত্রোভিচ (এইবার)।
ডিফেন্ডার: আলেকজান্ডার কোলারভ (এএস রোমা), ব্রানিস্লাভ ইভানোভিচ (জেনিত সেন্ট পিটার্সবার্গ), দোসকো তাসিক (গুয়াংঝো আরএফ), অ্যান্টোনিও রুকাভিনা (ভিলারিয়াল), মিলোস ভেলজকোভিচ (ওয়ারার ব্রেমেন), মিলান রডিক (রেড স্টার বেলগ্রেড), ইউরজ স্প্যাগিক ), নিকোলা মিলেনকোভিচ (ফিয়োরেটিনি)।
মিডফিল্ডার: নমেননজা ম্যাটিচ (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), লুকা মিলিভোজেভিচ (ক্রিস্টাল প্যালেস), কোয়েস মিলানকোভিচ-সেভিচ (ল্যাজিও), মার্কো গ্রুজিচ(লিভারপুল), অ্যাডেম লজাজিচ (টেরনো), দুসান তাদিচ (সাউদাম্পটন), ফিলিপ কোস্টিচ (হামবুর্গ এসভি), আন্দরিজা জিবকোভিচ (বেনফিকা), নমেনজা রেদোনজিচ (রেড স্টার বেলগ্রেড)।
ফরোয়ার্ড: আলেকজান্ডার মিত্রভিচ (নিউক্যাসল ইউনাইটেড), আলেকজান্ডার প্রিজোভিচ (পিএওকে স্যালোনিকা), লুকা জোভিচ (বেনফিকা)
ব্রাজিলের গ্রুপ সঙ্গী হিসেবে পরবর্তী রাউন্ডে পোঁছাতে হলে সুইসদের সার্বিয়া আর কোস্টারিকার বাধা আগে পাড় হতে হবে। সেক্ষেত্রে বাজির দরে বেশ এগিয়েই আছে সুইসরা। ২২ জুনের সার্বিয়া বনাম সুইজারল্যান্ডের ম্যাচে সার্বিয়ার জয়ের দর ২.৯০ এর বিপরীতে সুইসদের জয়ের দর ২.৬০। অবশ্য ২৭ জুনের সুজারল্যান্ড বনাম কোস্টারিকা ম্যাচে যথেষ্টই এগিয়ে সুইসরা। তাঁদের জয়ের নির্ধারিত দর ১.৮৩ এর বিপরীতে কোস্টারিকার জয়ের দর ৪.৫০।