বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এ পর্যন্ত ১১১ টি টেস্ট ম্যাচে খেলে ১২ টি ম্যাচ জিতেছে। যদিও, এই পরিসংখ্যানটি আরও ভালো হতে পারতো, তবে হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। আমরা এর মধ্যে থেকেই বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট এর সেরাটি ম্যাচ গুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি আজ। এখানে আমাদের পর্যালোচনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সেরা ৫ টি টেস্ট ম্যাচ এর তালিকা তুলে ধরা হল।
#৫ পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ, মুলতান, ২০০৩
আশ্চর্য হলেও সত্যি, আমরা একটি হেরে যাওয়া টেস্ট ম্যাচ দিয়েই সেরা টেস্ট ম্যাচের তালিকা টি শুরু করছি। অবশ্য ফলাফল বিবেচনা করলে এটি বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে হৃদয় বিদারক টেস্ট ম্যাচ ছিল।

সেই ম্যাচে টসে জয়ের পর ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ততকালীন সময়ের সবচেয়ে মারাত্মক বোলিং আক্রমনের বিপক্ষে খর্ব শক্তির বাংলাদেশ তাঁদের প্রথম ইনিংসে ২৮১ রান করতে সক্ষম হয়। হবিবুল বাশার ৭২ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। জবাবে পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৭৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। মোহাম্মদ রফিক ৩৬ রানে ৫ উইকেট নেন এবং প্রথম ইনিংসে ১০৬ রানের বিশাল লিড পায় বাংলাদেশ।
কিন্তু বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে সেই লিড টাকে আরো বড় চেহারা দিতে ব্যর্থ হয়। তাঁদের দ্বিতীয় ইনিংস মাত্র ১৫৪ রানেই শেষ হয়ে যায়। এতে পাকিস্তানের জন্যে ম্যাচের শেষ ইনিংস টার্গেট গিয়ে দাঁড়ায় ২৬১ রান। বাস্তবিকই, এই টার্গেট তাড়া করাও তাদের জন্য একটি যথেষ্ট কঠিন ছিল। যাইহোক, ম্যাচের সবকিছুই সফরকারীদের অনুকূলেই যাচ্ছিল, কিন্তু একজন মানুষ এই দুই পক্ষের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়। ইজামাম উল হক ১৩৮ রানের এক মহা কাব্যিক অপরাজিত ইনিংস খেলে মাত্র ১ উইকেট বাকি থাকতে তাঁর দলকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেন।
#৪ বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়া, ফাতুল্লাহ, ২০০৭
সেরা টেস্ট ম্যাচের তালিকায় আমরা আরো একটি হেরে যাওয়া ম্যাচ যোগ করলাম। তবে এই তালিকায় এই ম্যাচটি কথা উল্লেখ না করলেই নয়।

সেই ম্যাচে টসে জয়ের পর প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। বিস্ময়করভাবে, টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সেরা বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে তাঁরা ৪২৭ রানের এক বিশাল সংগ্রহ দাড় করিয়ে ফেলে। শাহরিয়ার নাফীস খেলেন বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ১৩৮ রানের এক অতিমানবীয় ইনিংস।
আরো আশ্চর্যজনক হল প্রথম ইনিংসে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ানরা মাত্র ২৬৯ রানে অলআউট হয়ে যায়। অ্যাডাম গিলক্রিস্টের ১৪৪ রানের ইনিংসটি তাঁদের ইতিহাসের অন্যতম লজ্জাজনক ফলোঅনের হাত থেকে দলকে রক্ষা করে।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে পাওয়া বিশাল লিড কে দ্বিতীয় ইনিংসে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। মাত্র ১৪৮ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। আর অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৩০৭ রান। এই রানেই অতিকায় শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে বেঁধে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা করেন বাংলাদেশের বোলাররা। বিশেষ করে মোহাম্মদ রফিক ম্যাচে ৯ উইকেট নিলেও অজি অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের ১১৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে কাছে হার মানতে হয় লড়াকু বাংলাদেশকে। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া সেই ম্যাচটি ৩ উইকেটে জিতে নেয়।
এই পর্যন্ত পড়েই হতাশ হবেন না। আমাদের তালিকা এখন শেষ হয় নি বুঝতেই পারছেন। তাই এই আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বতে আপনাদের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের মন ভাল করে দেওয়ার মত কিছু থাকছে। আশাকরি পুরোটা পড়ে আমাদেরকে আপনারা অবশ্যই ধন্যবাদ দেবেন।