ম্যাচটা প্রীতি ম্যাচ হলেও ব্রাজিলের কাছে ছিলো প্রতিশোধ নেবার ম্যাচ। গত বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে এই জার্মানির কাছেই ৭-১ এর লজ্জ্বাজনক হারে নিজেদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ হয়ে গিয়েছিলো ব্রাজিলের। ব্রাজিল কি পারবে ৪ বছরের জমিয়ে রাখা ক্ষোভ মিটাতে নাকি আরেকবার নিজদের শ্রেষ্ঠত্বের জানান দিয়ে যাবে জার্মানি। ফুটবল বাসীদের সেই প্রশ্ন নিয়েই মাঠে খেলতে নামে দুই দল, এবং যাতে জার্মানিকে তাদের মাটিতে ১-০ গোলে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নেয় ব্রাজিল।
ব্রাজিল-জার্মানি ম্যাচের প্রথমার্ধ:

ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে যায় দুই দল। হাই প্রেস করে ব্যস্ত রাখে একদল আরেকদলকে। ম্যাচের প্রথম সুযোগ পেয়েও গিয়েছিলো জার্মানি। ক্রুসের ফ্রি কিক গোমেজ হেড দিয়ে গোলবারের দিকে পাঠালেও এ যাত্রায় ব্রাজিলকে বাচান গোলকিপার এলিসন। ম্যাচের ৩৫ মিনিটের মাথায় একটি সহজ গোলের চান্স মিস করেন ব্রাজিল স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়াল জেসুস কিন্তু এর ২ মিনিট পরই নিজের ভুল শুধরে নেন জেসুস নিজেই । ডান প্রান্ত থেকে ইউলিয়ানের করা ক্রস দুর্দান্ত হেডে জালে জড়ান তিনি। হেডের ক্ষীপ্রতার কাছে হার মানেন জার্মান গোলকিপার কেভিন ট্রাপ। এরপর আক্রমণ পালটা আক্রমণে খেলা জমে উঠলেও গোলের দেখা পায় নি কোনো দলই।
ব্রাজিল-জার্মানি ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ:

ম্যাচের দ্বিতীয়াংশে গোলের জন্য আরো বেশি ক্ষুধার্ত হয়ে উঠে জার্মানি। কিন্তু ব্রাজিল ডিফেন্সের সামনে বারবারই পরাজিত তারা। ব্রাজিল ছেড়ে কথা বলার দল নয়। ডিফেন্সের পাশাপাশি আক্রমণ ভাগটাও অসাধারণ দক্ষতায় সামলিয়ে গেছে তারা। সুযোগ পেয়েও ছিলো ম্যাচের ৫৬ ও ৬৮ মিনিটে। কিন্তু জার্মান ডিফেন্ডাররা এবার আর কোনো ভুল করেন নি। যার ফলে খেলা শেষ হয় ১-০ গোলেই।
নেইমার বিহীন ম্যাচে জার্মানের বিরুদ্ধে এই জয়ে প্রতিশোধের পাশাপাশি বিশ্বকাপের আগে নিজেদের মনোবল আর প্রস্তুতি খুব ভালোভাবেই সম্পন্ন করল টিটের শিষ্যরা। আগের ম্যাচে রাশিয়াকে ৩-০ তে হারানোর পর এই ম্যাচে জার্মানিকে ১-০ গোলে হারিয়ে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছে পুরো দল। তাহলে কি ব্রাজিল এবার পারবে নিজেদের হেক্সা জয়ের স্বপ্ন পূরন করতে! যাক, তাতো সময়ই বলে দিবে।
স্পেন-আর্জেন্টিনা ম্যাচের প্রথমার্ধ:

ওদিকে আরেক প্রীতিম্যাচে প্রায় ৮ বছর পর মুখোমুখি হয় স্পেন আর্জেন্টিনা। ম্যাচের শুরুতে মেসির খেলা নিয়ে শংশয় থাকলেও শেষ পর্যন্ত উরুর চোটের কারনে খেলা হয়ে উঠেনি এই আর্জেন্টাইন সুপারস্টাররে। গত ম্যাচে ইতালির বিপক্ষে জয় আর শেষ দেখায় স্পেনকে ৪-১ এ হারানোর সুখ স্মৃতি নিয়ে মাঠে নামলেও এবার আর জয় নিয়ে ফিরতে পারেনি আলবিসেলেস্তারা। বরংচ নিজেদের ইতিহাসের অন্যতম লজ্জ্বাজনক হারের মুখ দেখে ঘরে ফিরে সাম্পাওলির শিষ্যরা।
মেসি, ডি মারিয়া, আগুয়েরো বিহীন ম্যাচে খেলার শুরু থেকেই বল পায়ে রেখে খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। মাসচেরানোর ফেরায় আর বানেগার বুদ্ধিদীপ্ত খেলায় প্রথমদিকে বেশ কয়েকটি আক্রমণ করে আর্জেন্টিনা।এমনিকি ম্যাচের ৮ মিনিটে গোলকিপারকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি দলের নাম্বার ৯ হিগুয়েন। এর ৪ মিনিট পরই ডিফেন্ডারের ভুলে ডি বক্সের সামান্য বাইরে বল পায়ে পেয়ে যায় স্পেন। বল পেয়ে দেরীও করেননি এসেনসিও। ডিয়াগো কস্তাকর দিকে বল বাড়িয়ে দেন তিনি এবং স্পেনের গোলের খাতায় জমা পরে তাদের প্রথম গোলটি। ম্যাচের ২৭ মিনিটের মাথায় আরেকবার এসেনসিওর এসিস্টে গোলের দেখা পায় স্পেন । এবারের গোলদাতা ইয়াং ট্যালেন্ট ইস্কো। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে ইভার বানেগার কর্নার কিক ওটামেন্ডি হেডে জালে জড়ালে ২-১ এ শেষ হয় খেলার প্রথমার্ধো।
আর্জেন্টিনা-স্পেন ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ:

বিরতির পর থেকেই মাঠে চলতে থাকে স্পেনের একার আধিপত্য। ম্যাচের ৪৬ মিনিটে ডিয়াগো কস্তার বদলে মাঠে নামে ইয়াগো আসপাস। ৫২ মিনিটে তারই এসিস্টে দলের ৩ নাম্বার গোলটি করেন ইস্কো। যার ৩ মিনিট পর ঝিমিয়ে পড়া আর্জেন্টিনার ডিফেন্সকে ফাকি দিয়ে গোল করেন থিয়াগো আলকানতারা। এর রেশ কাটতে না কাটতেই এবারো গোলের দেখা পায় স্পেন। এবার গোলোদাতা আসপাস। ৭৪ মিনিটে আর্জেন্টিনার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে নিজের হ্যাট্রিক পূরণ করেন ইস্কো। আর এরই মাধ্যমে ৬-১ হারের বিশাল লজ্জ্বা নিয়ে খেলা শেষ করে আর্জেন্টিনা।