সবার আশংকা সত্যি করে দেরাদুনে তিন ম্যাচের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স টি২০ সিরিজের ২য় ম্যাচ হেরে সিরিজ হার নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টি২০ তেও তাঁরা আফগানদের কাছে অসহায় আত্নসমর্পন করেছে। আসলে আত্নসমর্পন করেছে বললে আফগানদের কৃতিত্বটা খাট করেই দেখানো হয়। মূলত আফগানদের শক্তিশালী স্পিন আক্রমণ বাংলাদেশকে নাকানিচুবানি খেতে বাধ্য করেছে।

প্রথম টি২০র মত এদিন আর টসে জিতে আফগানদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় নি বাংলাদেশ। হয়তো এবার আর টার্গেট নিয়ে খেলে আফগান স্পিনাদের তোপের মুখে পড়তে চায় নি বাংলার ব্যাটসম্যানরা। তবে লাভের লাভ কিছুই হয় নি। আফগান স্পিনের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের অবস্থা সেই তাথৈবচ ই রয়ে গেছে। ৬ উইকেটে দ্বিতীয় টি২০ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে, এখন বাকি আছে হোয়াইওয়াশের আশংকা।
এই সিরিজ শুরুর আগে যাবতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন বিশ্বের এক নাম্বার টি২০ বোলার লেগ স্পিনার রশিদ খান। তাকে সামলানোর প্রস্তুতিটা বেশ ঘটা করেই নিয়েছিল বাংলাদেশ, তাতে আখেরে লাভ যে কিছুই হয়নি তা প্রথম দুই ম্যাচে রশিদ খানের বোলিং ফিগার আর বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের ব্যাট চালানো দেখেই আন্দাজ করা যায়।
রশিদ খান কে নিয়েই যত আলোচনা হওয়ার সুবিধাটা বেশ ভাল ভাবেই নিয়েছেন আরেক রহস্য স্পিনার মুজিব উর রহমান। যদিও আইপিলে খেলে বেশ আলোড়ন তুলেছিলেন এই মুজিবও। কিন্তু তিনি যে পাওয়ার প্লে তে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের পাওয়ার লেস করে দেবেন এটাই বা কজন ভাবতে পেরেছিল। কেউ ভাবুক আর না ভাবুক বাস্তবতা এখন এটাই।
এই দুজনের সাথে আছেন আরেক অভিজ্ঞ অফ স্পিনার মোহাম্মদ নবি। আসলে স্পিনার না, ব্যাটিং বোলিং দুই ভূমিকাতেই বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছেন এই অল রাউন্ডার।

এতো গেল আফগান বোলিংয়ের কথা, কিন্তু মোস্তাফিজ হীন বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপ যে আফগান ব্যাটসম্যানদের জন্যে একেবারেই মামুলি হয়ে যাবে সেটাই বা কেন? দুই ম্যাচেই প্রথম ১৫ ওভার নিয়ন্ত্রিত বোলিং করা বাংলাদেশ দুই ম্যাচেই স্লোগ ওভারে যেন বল করাই ভুলে গেল! অনভিজ্ঞ আবু জায়েদ বা আবুল হাসানদের কথা বাদই দিলাম, কিন্তু অভিজ্ঞ রুবেলের স্লোগ ওভারে যাচ্ছেতাই বোলিংয়ের কারনটাও অজানা।
অনেকেই হয়তো বলতে পারেন অধিনায়ক সাকিব বোলিং পরিবর্তনে ব্যর্থ। হ্যা এটা ঠিক যে তিনি মাহমুল্লাহ বা মোসাদ্দেকের মত বোলারদের আরেকটু বেশি ব্যবহার করতেই পারতেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞ স্পিনার হীন বাংলাদেশের স্লোগ ওভারে বল করাটা তো রুবেল, রাহিদেরই কাজ। আর আফগানরা যেখানে স্পিন দিয়েই ঘায়েল করছে বাংলাদেশেকে, সেখানে দলের সাথে থাকা মেহেদি হাসান মিরাজের মত স্পিনার অল রাউন্ডাকে কেন খেলাচ্ছেনা বাংলাদেশের এটাও বোধগম্য নয়।
আর আফগান স্পিনাররা যতই ভাল হোক বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কি আন্তর্জাতিক মানের স্পিন খেলার অভিজ্ঞতা একেবারেই নেই? তাহলে কেন ওভারে অন্তত ৪/৫ রান রান নিয়ে ঝুঁকিহীন ভাবে রশিদ মুজিবদের খেলার পরিকল্পনাই বা কেন করছে না টিম ম্যানেজমেন্ট এবং ব্যাটসম্যানরা? সাকিব, মুশফিক, লিটনদের অদূরদর্শী শট সিলেকশন কি রশিদ খানদের কাজটা আরো সহজই করে দিচ্ছে না?

এছড়াও সিনিয়ার চার ব্যাটসম্যান ছাড়া বাংলাদেশের বাকি ব্যাটসম্যানদের দলে আসলে ভূমিকাটাই বা কি সেটাও এখন পর্যন্ত রহস্যে ঘেরাই রয়ে গেছে এখন পর্যন্ত। কারন একেক ম্যাচে একেকজনকে নানান পজিশনে খেলানো হচ্ছে। আরে তাতেও কোন ফলই হচ্ছে না।
এত রহস্য আর প্রশ্নবানে জর্জরিত বাংলাদেশ কি শেষ ম্যাচটা জিতে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বাঁচতে পারবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। তবে বাজির দর অবশ্য সেরকম কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে না । এর আফগানদের জয়ের জন্যে ১.৮ রেটের বিপরীতে বাংলাদেশের রেট ২.০০ রয়েছে।