ওয়ানডে সিরিজের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৫১ রানের জয় পেয়েছে ‘ বিবিসি একাদশ ‘। আর দুই মাস পর ইঞ্জুরি থেকে ফিরেই দূর্দান্ত এক শতক হাকিয়েছেন তামিম ইকবাল, সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন সৌম্য সরকারও।

বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর ওয়ানডে সিরিজ শুরু হওয়ার আগে বেশ ভাল প্রস্তুতি সেরে নিলো বাংলাদেশ দল। আসলে বাংলাদেশ দল বলার কারন হল বিসিবি একাদশ এর সদস্যদের নাম আর মাঠে আধিপত্য বিস্তার এর সবকিছুই যে ছিল মূল বাংলাদেশ জাতীয় দলের মতই। আর নিজিদের ঝালিয়ে নিতে আজকের ম্যাচে মাঠে নামা মাশরাফি-তামিম-সৌম্য-ইমরুল-রুবে
অবশ্য বিকেএসপি এর মাঠে দিনের শুরুটা ছিল সম্পূর্ণ ই উইন্ডিজ ময়। টেস্ট সিরিজে ওয়াইটওয়াশের জ্বালা মেটাতেই যেন আক্রমনাত্মক হয়ে মাঠে নেমেছিল ক্যারিবিয়রা। ১০১ রানে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে তাদের। এরপরে শাই হোপ আর মারলন স্যামুয়েলস এর ব্যাটে বেশ বড় সংগ্রহের ভিত্তি পেয়ে যায় সফরকারী উইন্ডিজ।
ব্যক্তিগত ৮১ রানে শাই হোপ ফিরে গেলেও শেষ দিকে রস্টন চেজ আর রভমান পাওয়েল এর ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ৩৩১ রানের বিশাল পূঁজি পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বিকেএসপি এর মরা পিচে বোলারদের জন্যে কিছু যে থাকবে না সেটা আগেই জানা ছিল সবার। তবে যে কোন মাঠেই ৩৩১ রান তাড়া করে যেতাটা মোটেও সহজ কথা নয়। তবে বিসিবি একাদশ নামের আড়ালে নিজেদের গা গরম করতে নামা জাতীয় দলের তারকারা যে সেই টার্গেট টিকে এমন মামুলী বানিয়ে ফেলবেন সেটাও হয়তো কেউ ভাবে নি।

ইঞ্জুরি থেকে ফিরেই রানের পাহাড় তাড়া করতে নামা তামিম ইকবাল কে দেখে বোঝারই উপায় ছিল না যে প্রায় তিন মাস পরে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে নেমেছেন তিনি। ইমরুল কায়েসকে সাথে নিয়ে ৮১ রানের ওপেনিং জুটিতেই নিজের অর্ধশত পূরন করে ফেলেন তামিম। এরপরে ইমরুল সাজঘরে ফিরে গেলেও জাতীয় দলের আরেক ওপেনিং পার্টনার সৌম্য সরকারকে নিয়ে উইন্ডিজ বোলারদের উপর রীতিমত চড়াও হয়ে বসেন তামিম ইকবাল।
তামিম-সৌম্য এর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে যোগ হয় আরো ১১৪ রান। আর দলীয় ১৯৫ রানে যখন দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তামিম ইকবাল, তখন তাঁর নামের পাশে মাত্র ৭৩ বলে ১০৭ রানের এক স্ট্রোক ঝলমলে ইনিংস। ১৩ চার আর ৪ টি বিশাল ছক্কায় সাজানো ইনিংসটি যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার অপেক্ষায় থাকা তামিমের আত্নবিশ্বাসের পালে দমকা হাওয়া দিয়ে গেল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
তামিম ফিয়ে গেলেও উইন্ডিজ বোলারদের ধোলাই এর কাজটা ঠিকই চালিয়ে যেতে থাকেন সৌম্য সরকার। উইকেটের এক পাশ ধরে রেখে মাত্র ৮৩ বলেই সেঞ্চুরি তুলে নেন জাতীয় দল অনিয়মিত হয়ে পরা সৌম্য। তিন অংকের ঘরে পৌঁছাতে তিনি হাঁকান ৭ টি বাউন্ডারি আর ৬ টি ওভার বাউন্ডারি।

৪১ ওভার শেষে যখন বিসিবি একাদশের স্কোর ৬ উইকেটে ৩১৪ রান তখনই আলো স্বল্পতার কারনে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। ক্রিজে তখন ১০৩ রানে অপরাজিত থাকা সৌম্যর সাথে ছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। যেহেতু বিকেএসপির মাঠে রাত্রিকালীন খেলা চালিয়ে যাওয়ার কোন আলোর ব্যবস্থা নেই, তাই ম্যাচ অফিসিয়ালদের কাছে ফলাফল নির্ধারণ করার জন্যে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতির সাহায্য নিতে হয়। আর সেই পদ্ধতিতেই বিসিবি একাদশ ৫১ রানের বিশাল জয় পায়।
তবে ইঞ্জুরি থাকে তামিমের রাজসিক প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে সৌম্যের সেঞ্চুরি ঝামেলায় ফেলে দিয়েছেন নির্বাচকদের। তামিম ইকবাল যে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওপেনিং এর প্রথম বাছাই এটা ধ্রুব সত্য, তবে অন্য প্রান্তে তাকে কে সঙ্গ দেবেন সেটাই দেখার বিষয়। কারন সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় ইমরুল-সৌম্য-লিটন সবাই যে তামিমের ওপেনিং পার্টনার হওয়ার যোগ্য দাবিদার।