দুবাই এশিয়া কাপের আসর টি হচ্ছে পুরুষদের একদিনের আন্তর্জাতিক এবং টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। ১৯৮৩ সালে এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ আরো ভালো করার জন্য এই কাউন্সিল এই জন্ম। মূলত এটি দু বছর পর পর অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য নির্ধারিত ছিলো।
প্রথম এশিয়া কাপ ১৯৮৪ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হয়।১৯৯৫ সাল পর্যন্ত এশিয়া কাপের এই কাউন্সিল এর হেড অফিস সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছিল। শ্রীলংকার সাথে বিরোধপুর্ন ক্রিকেট সম্পর্কের কারণে ভারত ১৯৮৬ সালের এশিয়া কাপের আসরকে প্রত্যাখ্যান করে। ১৯৯০ থেকে ৯১ এর টুর্ণামেন্ট ভারত পাকিস্তানের মধ্যকার রাজনৈতিক কোন্দলের কারণে পাকিস্তান সেবারের এশিয়া কাপ বর্জন করে।

১৯৯৩ সালের এশিয়া কাপ আসরটি ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যেকার রাজনৈতিক কোন্দলের কারণে বাতিল হয়ে যায়। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল ২০০৮ সালে সিদ্ধান্ত নেয় যে এশিয়া কাপ টি প্রত্যেকবার দ্বিপাক্ষিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল একটি আদেশ জারি করেন যে এশিয়া কাপের প্রত্যেকটি আসর একদিনের আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৫ সালের পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল ঘোষণা দেয় যে ২০১৬ থেকে এশিয়া কাপের খেলাগুলো রোটেশন ভিত্তিতে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ এবং টি-টোয়েন্টি ফরমেট এ পর্যায়ক্রমে খেলা হবে। এবং তারই ফলস্বরূপ ২০১৬ সালের এশিয়া কাপ টি টোয়েন্টি ফরমেটে অনুষ্ঠিত হয়।
এক দিনের ফরমেটে এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত ভারত এবং শ্রীলঙ্কা দুজনেই ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে এগিয়ে আছে। পাকিস্তান এখন পর্যন্ত ২ বার শিরোপা অর্জন করতে পেরেছে। ভারত টি টোয়েন্টি ফরমেটে সব থেকে ভাল অর্জন করেছে। ২০১৬ সালের প্রথম টি টোয়েন্টি ফরমেটের এশিয়া কাপে ভারত শিরোপা অর্জন করে। এই টুর্ণামেন্টে ভারত এখন পর্যন্ত সর্বাধিক সাফল্য অর্জিত দল, তারা মোট শিরোপা অর্জন করেছে ৬ বার যার মধ্যে পাঁচ বার একদিনের আন্তর্জাতিক ফর্মেটে এবং একবার টি-টোয়েন্টি ফর্মেটে।
১৯৮৪ সালের এশিয়া কাপ দুবাইয়ের শারজাহ এ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেবার এশিয়া কাপে তিনটি দল অংশগ্রহণ করে এর মধ্যে ছিল ভারত, পাকিস্তান এবং আইসিসির নতুন সদস্য শ্রীলংকা। ভারত সেবারের শিরোপা অর্জন করে এবং শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। প্রথম ম্যাচটি ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পাকিস্তান দুটি খেলার একটিতেও জয়লাভ করতে পারেনি এবং পরাজয় মেনে নিয়ে তারা টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে যায়।
দ্বিতীয়বারের এশিয়া কাপের আসর ১৯৮৬ সালে শ্রীলংকার অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ভারত সেভাবে আসর থেকে তাদের সমর্থন উঠিয়ে নেয় কারণ তার আগের বছরে ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যকার একটি ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের কারনে ভারত এবং শ্রীলংকার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং সেবারই প্রথম বাংলাদেশ এশিয়া কাপে অংশগ্রহণ করে।
ফাইনালে পাকিস্তানকে পরাজিত করে শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় আসরের শিরোপা অর্জন করে। ১৯৮৮ সালে দ্বিতীয় আসরটি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয় সেবারই প্রথম বাংলাদেশে কোন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। ভারত শ্রীলংকা কে ৬ উইকেটে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মতো এশিয়া কাপ শিরোপা অর্জন করে।
২০০০ সালে এশিয়া কাপের আসর বাংলাদেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেবার পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা ফাইনালে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মুখোমুখি হয় এবং ভারত বাংলাদেশের বিপক্ষে শুধুমাত্র একটি ম্যাচে জয়লাভ করে। ফাইনালে পাকিস্তান শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা অর্জন করে এবং ইউসুফ ইউহানা টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়।

২০১৬ সালের প্রথম টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ দিয়ে বাংলাদেশে তৃতীয় বারের মত এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এই আসরটি সে বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। ফাইনাল খেলাটি ৬ মার্চ ২০১৬ তে অনুষ্ঠিত হয়। ফাইনাল খেলাটি ঢাকার শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়, ভারত বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে পরাজিত করে টি-টোয়েন্টি প্রথম আসরের শিরোপা অর্জন করে।