গত পরশু এশিয়া কাপ ২০১৮ এর সুপার ফোর এর সূচি নির্ধারণ করে ফেলেছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল, এসিসি। অথচ, যখন তাঁরা এই সূচি নির্ধারণ করেছে তখনও গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচ বাকি।
কি অদ্ভুদ ব্যাপার! গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ হওয়ার আগেই এসিসি ঠিক ধরে নিয়েছে ‘এ’ গ্রুপের নাম্বার ‘১’ দল হল ভারত আর গ্রুপ ‘বি’ এর নাম্বার দল আফগানিস্তান। এসিসি এর এমন কান্ড জন্ম দিয়েছে অহেতুক বিতর্কের।

যদিও দুই গ্রুপের সেরা দুই দল সুপার ফোরে খেলবে এটা আগে থেকেই ঠিক করা। এমনকি চার দলের প্রত্যেকেই প্রত্যেকের বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ খেলবে, তাই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন আর রানার্সআপ এ খুব একটা কিছু যায় আসে না। তারপরেও এসিসি কিসের ভিত্তিতে এই ‘১’ আর ‘২’ নির্ধারণ করলো তা এক রহস্য।
তবে এই রহস্য ভেদ করতে আপনাকে শার্লক হোমস বা কোন রকেট সায়েন্টিস্ট হতে হবে না। এসিসি এই হাস্যকর ও বিতর্কিত কাজটা করেছে ‘স্বাগতিক’ ভারতকে কিছুটা বাড়তি সুবিধা দিতে। কারন এই এশিয়া কাপের আয়োজন তো ভারতেই হওয়ার কথা ছিল।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাঠফাটা গরমে যেন তাদের কোন ভ্রমণ ক্লান্তি পোহাতে না হয় তাই শুরু থেকেই ভারত চাইছিল সব ম্যাচ দুবাইতেই খেলতে। সেই দাবি পূরণ করতে গিয়েই এসিসি খেলা শেষ হবার আগেই সূচি ঠিক করে ফেলেছে। দুবাই আর আবুধাবির মধ্যে দেড় ঘন্টার সড়ক পথের যাত্রা থেকে ভারতকে কৌশলে মুক্ত হয়ে গেল ভারত।
তবে এসিসি এর এমন কান্ড অন্যদের বেশ ভাল ভাবেই ক্ষুব্ধ করেছে। যেকোন সময় টুর্নামেন্ট চলাকালেই কোন বিতর্কিত কিছু নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তা বরাবরই ডিপ্লোমাটিক উত্তর দিয়ে কাটিয়ে যান টাইগার ক্যাপ্টেন মাশরাফি। কিন্তু এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে ‘২’ ধরায় বেশ অসন্তুষ্ আর অবাক তিনিও।

আর বেশ খোলামেলা ভাবেই সেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। এ প্রসংগে মাশরাফি সাংবাদিকদের বলেন, ” এটা খুবই হতাশাজনক। শেষ ম্যাচ খেলার আগেই আমাদের ‘বি’ গ্রুপের দ্বিতীয় দল করে দেওয়া হল। আমরা তো এখানে একটা পরিকল্পনা নিয়ে এসেছি। প্রথমে আমরা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলব, যদি জিতি এবং ভাল খেলি তবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ এর সাথে খেলব।”
তিনি আরো বলেন, ” গ্রুপ পর্ব বলুন বা সুপার ফোর, সবকিছু পরিচালনার একটা নিয়ম তো আছে। আমরা সেই নিয়ম থেকে সরে যাচ্ছি, এটা দুঃখজনক।”
এদিকে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এরই মধ্যে অভিযোগ এনেছে ভারকে সুবিধা দিতেই এসিসি এমনটা করেছে। নতুন এই সময়সূচির তীব্র সমালোচনা করে পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ বলেন, ” আবুধাবিতে যদি খেলা হয়, তবে সব দলকেই সেখানে খেলতে হবে। ভ্রমণক্লান্তি এমন একটা ব্যাপার। খেলার মধ্যে আপনাকে ৯০ মিনিট ভ্রমণ করতে হলে বিষয়টা কঠিন হয়ে যায়।”
অবশ্য বাংলাদেশকে ‘বি ২’ ধরার পরপর দুই দিন আবুধাবি আর দুবাইতে দুই দিন দুটি ম্যাচ খেলতে হবে। তবে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ দুবাই গিয়ে ভারতের সাথে খেলতে হলেও বাংলাদেশের পরের দুই ম্যাচ আবুধাবিতেই।