মৌসুমে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়নি, কিন্তু এরই মধ্যে সর্বত্র দলবদলের মুখরোচক খবর ছড়াতে শুরু করেছে। মূলত, প্রতিটি মৌসুমের এই নির্দিষ্ট সময়ে জন্যে এটি একটি খুবই স্বাভাবিক দৃশ্যকল্প। দর্শকদের যখন লিগ টেবিলের অবস্থান নিয়ে আলোচনার কিছু থাকে না তখনি এটি তাদের আলোচনার মূল উপজীব্য হিসেবে হাজির হয়। এই বছরও তেমন কোন ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
চলুন তাহলে সারা ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দলবদলের আপডেট গুলো জেনে নেয়া যাক।
রিয়েলর নজর ‘হট কেক‘ সালাহর দিকে

কে এই ট্রান্সফার উইন্ডোতে সালাহকে দলে ভেড়াতে চাইবে না? সেটাই আগে বলুন। যাইহোক, মূল বিষয় হল, লিভারপুল তাঁদের সোনার ডিম পাড়া হাঁসটি বিক্রি করতে চায় কি না?
এখন পর্যন্ত এর সম্ভাব্য উত্তরটা না ই হবে। প্রকৃতপক্ষে লিভারপুল ম্যানেজমেন্ট সালাহর সাপ্তাহিক বেতনম ৯০০০০ পাউন্ড থেকে ১৮৫০০০ পাউন্ডে উন্নিত করে মো সালাহর লিভারপুলে থাকাটা আরো নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।
অন্যদিকে রিয়েল প্রেসিডেন্ট পেরেজ সালাহকে বার্নাব্যুতে নিতে চাচ্ছেন। আর সেই ক্ষেত্রে লিভারপুলও সালাহ জার্সিতে 176 মিলিয়ন পাউন্ডের একটি মূল্য নির্ধারণ ট্যাগ ঝুলিয়ে দিয়েছে করে। শুধু তাই নয় এই দামের সাথে তাঁরা দুটি বড় নামের শর্ত জুড়ে রেখেছে। সম্ভবত, তাঁরা বেল এবং কেইলর নভাসকে চাইবে ঐ নির্ধারিত মূল্যের বাইরেও।
আর বাস্তবতা হল, এটি রিয়ালের জন্যে চাহিদাপত্রটি বেশ ভারি অলাভজনক বলেই মনে হচ্ছে। সম্ভাব্য ক্রেতা নাম যখন গ্যালাক্টিকোস যুগের প্রতিষ্ঠাতা পেরেজ, তখন আপনি আসলেই বলতে পারেন না কি হতে চলেছে।
ইউনাইটেড গ্রিজমানের সাথে পগবার বিনিময় করতে চায়

আমার মনে হয়, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড পল পগবা নামের বোঝাটা আর টানতে চাইছে না। ওল্ড ট্রাফোর্ডে এই মৌসুম জুড়ে তাঁর পারফরম্যান্সের গ্রাফটাও তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না এবং ইঞ্জুরির কারনে তাকে অনেক লম্বা একটা সময় মাঠের বাইরে কাটাতে হয়েছে। সাথে কোচ মোরিনহোর সাথে শত্রু ভাবাপন্ন সম্পর্কটা ততো রয়েছেই।
আর তাই এখন, ইউনাইটেড তাকে আলটলেটিকো মাদ্রিদ এর ফরাসি ফরোয়ার্ড এন্টোনিও গ্রীজমানের সঙ্গে বিনিময় করতে চাইছে। এছাড়াও ইউনাইটেড বার্সেলোনা থেকে অরেক ফ্রেঞ্চম্যান উমতিতিকে দলে টানতে চাইছে।
টাকার বস্তা নিয়ে প্রস্তুত ম্যান সিটি

মাল্টি বিলিওনিয়ার শেখ মনসুরের মালিকানাধীন ম্যান সিটি ইতিহাদ স্টেডিয়ামে কিছু নতুন মুখ নিয়ে আসার জন্য প্রস্তুত। সিটি বস গার্ডিওয়োলাকে এই দলবদলের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে মজা করে বলেন যে তাঁর দল এই গ্রীষ্মে বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করতে যাচ্ছে।
প্রকৃতপক্ষে, সিটি বসের পছন্দের নামের তালিকাটা এসেন্সিও, ইসকো, বেল, লুইজ জর্জিনিও এবং জোয়াও ফেলিক্সের মতো বড় বড় নাম দিয়ে ঠাসা। সুতরাং, তিনি জানেন যে যদি কোন চুক্তি করতে হয় তবে অবশ্যই তাঁদেরকে প্রচুর অর্থ খরচ করতে হবে।
টোটেনহ্যাম হটস্পারের নজর লাৎজিও সেরা দুজনের উপর

টটেনহ্যাম হটস্পার লাৎজিওর সেরা দুই খেলোয়াড় সের্গেই মিলিনকোভিচ-সেভিচ এবং সিরো ইমোব্লিকে তাঁদের দলে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। এই উভয় খেলোয়াড়ই তাঁদের জীবনের সেরা ফর্মে রয়েছেন। তাছাড়া লাৎজিও স্ট্রাইকার ইমোব্লি এই মৌসুমের সিরি আ এর সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন। আর এই চুক্তির প্রত্যাশিত মূল্য ধরা হচ্ছে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ডের চেয়েও কিছুটা বেশি, আর এর জন্যে তাঁরা সম্ভবত কিছু নিয়মিত খেলোয়াড়কে বিক্রি করে টাকার যোগান দেয়ার ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে।
লেভান্ডওস্কির দলবদল নিয়ে যত বিভ্রান্তি

একটা গুজব বেশ আগে থেকেই চলছে যে এই মৌসুম শেষে লেভান্ডওস্কি রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিচ্ছেন। কিন্তু গুজবটা এখনও পর্যন্ত গুজবই রয়ে গেছে, কারণ সবাই বিভ্রান্তিতে আছে যে রিয়াল পড়ন্ত বয়সী লেভান্ডওস্কির জন্যে অনেক মোটা একটা অংক খরচ করবে কিনা?
অনেক বিশেষজ্ঞ মতামত হল, রিয়ালের আগে থেকেই ফরোয়ার্ডদের একটি শক্তিশালী রিসার্ভ বেঞ্চ রয়েছে, আর সেখানে লেভান্ডোওস্কির মত একজনের খুব একটা প্রয়োজনও নেই। দলবদলের বাজারে আরো একটি খবর শোনা যাচ্ছে যে লেভান্ডওস্কির জন্যে রিয়াল বেল এর বিনিময় করতে পারে। তবে রিয়াল প্রেসিডেন্ট পেরেজ ইঙ্গিত দিয়েছেন যে বেল আরো এক মৌসুম বার্নাব্যুতেই থাকছেন।
ট্রান্সফার উইন্ডো বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত দলবদলের গল্প বা গুজব কোনটাই বন্ধ হচ্ছে না। আর তাই কোনটা যে গুজব আর কোনটা খবর সেটা শুধুমাত্র সময়ই বলতে পারবে।