সেই ১৯৬৬ বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ ছিল ইংল্যান্ড এবং সে বছর তারা বিশ্বকাপ ট্রফিও নিজেদের ঘরে তুলেছিল।
বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো “থ্রি লায়নস” গানটি নিয়ে খুব সরব। কেনই বা হবে না? ইংল্যান্ড যে আবার তাদের ঘরে শিরোপা তোলার স্বপ্ন জাল বুনছে।
এবারের আসরের শুরু থেকেই ইংল্যান্ড দারুন খেলে আসছে। তারা ২য় ম্যাচে পানামাকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার এক দারুন বহিপ্রকাশ ঘটায়।
কিন্তু এর পরের ম্যাচেই তারা বেলজিয়ামের কাছে হেরে যায় । এর পরে শেষ ম্যাচে তারা সুইডেনের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় পায়।
ইংল্যান্ড এবং তাদের ফুটবল বিশ্বকাপঃ
এবারের বিশ্বকাপসহ তারা এখন পর্যন্ত ১৫ বার ফুটবল বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে এবং তারা এখন পর্যন্ত ৭ বার কোয়ার্টার ফাইনালও খেলেছে। তাদের জার্সিতে কেবলমাত্র ১ স্টার রয়েছে যা তাদের সেই ১৯৬৬ বিশ্বকাপ জেতার কথাকে জানান দেয়।
Source: FIFA
পরবর্তীকালে অবশ্য তারা আর কোন বিশ্বকাপ জিততে পারে নি। কিন্তু তারা এবারের আসর বাদে ১৯৯০ সালেও একবার সেমি-ফাইনাল খেলেছিল।
সুতরাং টেকনিক্যালি এবার তারা তাদের বিশ্বকাপ ইতিহাসের ৩য় সেমি-ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে।
যদি আমরা গতকালকের ম্যাচের দিকে তাকাই, আপনারা লক্ষ্য করে থাকবেন যে ম্যাচটি জেতা ইংল্যান্ডের জন্য সহজতর ছিল না।
প্রথম গোল পেতে তাদের অনেক কাঠ পোড়াতে হয়েছে। খেলার কেবল আধা ঘন্টা হয়েছে যখন ইংল্যান্ড একটি কর্ণার পায়।
ইয়ং কর্ণার থেকে কিক নেয় এবং হ্যারি ম্যাগুয়েরের এক দৃষ্টিনন্দন হেড শটে বল জালে জড়ায়।
এখান থেকে ৫টি জিনিস জানুনঃ
১) এই গোল ছিল হ্যারি ম্যাগুয়েরের প্রথম আন্তর্জাতিক গোল। এরপরের গোলটিও অবশ্য হেড শট থেকেই এসেছিল। এবার গোলটি করেন ডেলে আলি।
২) এই গোলের মাধ্যমে ডেলে আলি ইংল্যান্ডের হয়ে এক বিশেকাপে গোল করা ২য় সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় বনে যান।
৩) এখন পর্যন্ত এবারের বিশ্বকাপে থ্রি লায়নসরা প্রতিপক্ষের জালে ১১ বার বল পাঠায় এবং এর বিপরীতে তারা ৪ গোল হজম করে।
৪) মজাদার বিষয় হচ্ছে ইংল্যান্ড কোয়ার্টার ফাইনালে কোন গোলই হজম করে নি।
কিন্তু পরিসংখ্যান বলে এর আগে ইংল্যান্ড তাদের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচগুলোতে কমপক্ষে ১টি করে হলেও গোল হকম করেছিল।
৫) ১১ টি গোলের ৫ টি গোলই আসে হেড শট থেকে। মনে হয় তারা হেড শট দিতে বেশি ভালবাসে।
Source: Telegraph
সুইডেনকে হারানোর পর ইংল্যান্ডের দলপতি হ্যারি কেইন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ আমরা এখনও নিজেদের উপর বিশ্বাস রাখছি এবং জানি, আমরা ট্রেনিং এর সময় যা করি তা খেলায়ও আনি। কিন্তু সবসময় মাথায় এই ব্যাপারটিও আসে যদি আপনি একটি ফাউল পান এবং তা যদি রেফারি না দেখে তাহলে তা ভিএআর দিয়েও আনা সম্ভব।“
হ্যারি কেইন এবারের বিশেকাপে ইংল্যান্ডের জন্য একজন গুরুত্ত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে প্রমাণিত হয়েছেন। হবেই না কেন?
তিনি একা পানামার বিপক্ষে একটি হ্যাট্রিকসহ মোট ৬ গোল করেন। যদি ইংল্যান্ড এবার ফাইনালে যায় তাহলে “গোল্ডেন বুট” পাওয়ার সব থেকে বড় দাবিদার তিনিই হবেন।
Source: Albertsshed
অন্যদিকে, সাউথগেইট পিকফোর্ড সম্পর্কে বলেন, “ পিকফোর্ড একজন আধুনিক গোলকিপারের যেমন হওয়া উচিত সে তার একটি নমুনা মাত্র।”
পিকফোর্ড গতকালকের ম্যাচে ৩ টি অসাধারণ “সেভের” মাধ্যমে সুইডেনের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের জয় পেতে গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
দেখবার বিষয় এবারের বিশ্বকাপ ট্রফি ইংল্যান্ড নিতে পারে কি না? কে জানে? এবার হয়ত “থ্রি লায়নস” গানটিই সত্যি হয়ে গেল!